ক’ন্যা হয়ে জন্ম নেওয়াই যেন ছিল শিশুটির অপরা’ধ। রংপুরের বদরগঞ্জে ক’ন্যা সন্তান জন্ম হওয়ায় শীতের রাতে একদিনের শিশুকে ফে’লে পা’লিয়েছে বাবা-মা। বুধবার (২৭ জানুয়ারি) রাতে ঘটনাটি ঘটেছে জেলার বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।





শিশুটি এখন হাসপাতালের এক পরিচ্ছন্নতাকর্মীর তত্ত্বাবধানে শিশুটি রয়েছে। হ’তভাগ্য নবজাতকের বাবার নাম প্রদীপ বিশ্বাস আর মায়ের নাম পল্লবী বিশ্বাস। পার্শ্ববর্তী দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার পলাশবাড়ী ইউনিয়নের ধোবাকল গ্রামের ঠিকানা ব্যবহার করে বুধবার বিকালে বদরগঞ্জ মেডিকেলে ভর্তি হয়েছিলেন পল্লবী।





এদিন রাত ৮ টার দিকে শি’শুটি জন্ম গ্রহণ করে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, প্রদীপ বিশ্বাস তার গর্ভব’তী স্ত্রী পল্লবীকে নিয়ে বুধবার বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আসেন। ওই দিন পল্লবীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে স্বাভাবিকভাবে পল্লবী একটি ফুটফুটে সন্তান জন্ম দেন। যখন তারা জানতে পারেন সন্তানটি ছেলে নয়, মেয়ে হয়েছে। এতে পাষ’ণ্ড মা-বাবা ক্ষু’ব্ধ হয়ে ওঠে।





তাদের ঘরে পপি ও দীপা নামে যথাক্রমে ৯ ও ৫ বছরের আরও দুটি কন্যা সন্তান রয়েছে। আশা ছিল এবার ছেলে হবে। কিন্তু কন্যা সন্তান জন্ম হওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগ’ড়া বাঁ’ধে। এক পর্যায়ে ছাড়পত্র না নিয়ে হাসপাতালের বিছানায় ফে’লে পা’লিয়ে যায় নির্দয় বাবা মা। পরে তাদের না পেয়ে শি’শুটিকে নিজের হেফাজতে রাখেন হাসপাতালের পরিচ্ছন্নকর্মী জোবেদা বেগম।





ঘটনাটি জানাজানি হলে শি’শুটিকে দত্তক নিতে অনেকেই হাসপাতালে ভিড় করেন। জোবেদা বেগম বলেন, শি’শুটি নিজের সন্তান মনে করে নিয়েছি। ইতিমধ্যে ওর জন্যে আমরা শীতের অনেক জামা কাপড় কিনেছি। পরম যত্নে আর মায়া মমতায় আমরা শি’শুটি বড় করে তুলতে চাই। জোবেদা জানান তার ছোট বোন মোমেনার বুকের দুধ খাচ্ছে শিশুটি। এখন অনেকেই এসে ভিড় করছে বাড়িতে। আবার অনেকেই আমার কাছ থেকে দত্তক নিতে চাইছে।





শিশুটির বাবা প্রদীপ বিশ্বাসের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হলেও শি’শুটিকে তিনি নিতে চাননি। তিনি জানান, পথে-ঘাটে ঝালমুড়ি বিক্রি করে অতিক’ষ্টে তার সংসার চালে। ঘরে আরও দুটি মেয়ে আছে, যাদের ভরণ-পোষণই করতে পারছেন না।





বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হোসাইন বলেন, শিশুটিকে উদ্ধা’র করে তার বাবার কাছে ফেরত দেওয়ার চেষ্টা করছি। বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আরশাদ হোসেন বলেন, স্বাভাবিকভাবে শি’শুটির জন্ম হয়েছে। সকালে জানতে পারি রাতে ন’বজাতকটিকে হাসপাতালে ফেলে ছাড়পত্র না নিয়েই তার মা ও বাবা পা’লিয়ে গেছে।




